বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল ২০২৫
লর্ডসের ঐতিহাসিক মঞ্চে চলছে এক রোমাঞ্চকর ব্যাট-বলের দ্বৈরথ। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের দ্বিতীয় দিন শেষে দুই দলের উইকেট পড়েছে সমান ১৪টি করে—মোট ২৮ উইকেট! খেলার মোড় ঘুরেছে একাধিকবার। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ও দক্ষিণ আফ্রিকার দুই পেসার কাগিসো রাবাদা ও লুঙ্গি এনগিডি নিজেদের জাত চেনালেন বল হাতে।
কামিন্সের আগুনঝরা স্পেল, লর্ডসের ইতিহাসে সেরা
দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের সময় বেঁচে থাকার শেষ ভরসা ছিলেন ডেভিড বেডিংহাম। কিন্তু তাঁকেও ফেরালেন কামিন্স, নিজের ইনিংসে পঞ্চম শিকার বানিয়ে। এরপর রাবাদাকেও তুলে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস গুটিয়ে দেন এই অজি অধিনায়ক। কামিন্সের বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৬ উইকেট ২৮ রানে—লর্ডসের ১৪১ বছরের টেস্ট ইতিহাসে কোনো অধিনায়কের সেরা বোলিং পারফরম্যান্স! আর সেটা এল বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ধস, অস্ট্রেলিয়ার লিড
প্রোটিয়ারা প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় মাত্র ১৩৮ রানে। কামিন্সের ঝড়ো স্পেলে হঠাৎ করেই ভেঙে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইনআপ। অস্ট্রেলিয়া পায় ৭৪ রানের লিড।
রাবাদা-এনগিডির পাল্টা আক্রমণ
দ্বিতীয় ইনিংসে নামা অস্ট্রেলিয়া যেন নিজেরাই ফাঁদে পড়ে। মাত্র ৭৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বসে তারা। এরপর অ্যালেক্স ক্যারি ও মিচেল স্টার্ক চেষ্টা করেন হাল ধরার। ক্যারি করেন সর্বোচ্চ ৪৩ রান। স্টার্ক অপরাজিত ১৬ রানে ব্যাট করছেন। দিন শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ১৪৪/৮, লিড দাঁড়ায় ২১৮ রান। রাবাদা ও এনগিডি পেয়েছেন ৩টি করে উইকেট। বাকি দুটি উইকেট ভাগ করে নিয়েছেন ইয়ানসেন ও মুল্ডার।
লর্ডসে দুই দিনের হিসাব
প্রথম ইনিংস:
অস্ট্রেলিয়া: ২১২ রানদক্ষিণ আফ্রিকা: ১৩৮ রানকামিন্স: ৬/২৮
দ্বিতীয় ইনিংস (অবধি):
অস্ট্রেলিয়া: ১৪৪/৮ (৪০ ওভার শেষে)ক্যারি: ৪৩, লাবুশেন: ২২, স্টার্ক: ১৬*, লায়ন: ১*এনগিডি: ৩/৩৫, রাবাদা: ৩/৪৪
ইতিহাস বলছে…
লর্ডসে দক্ষিণ আফ্রিকা কখনো চতুর্থ ইনিংসে ১১৯ রানের বেশি তাড়া করে জিততে পারেনি। কেবল একবার, ১৯৯৮ সালে, তারা লর্ডসে জিতেছিল টার্গেট তাড়া করে। সেই বছরই তারা জিতেছিল আইসিসি নকআউট ট্রফি—এখন পর্যন্ত তাদের একমাত্র বৈশ্বিক ট্রফি।
তৃতীয় দিন শুরু করবেন স্টার্ক (১৬*) ও লায়ন (১*)। অস্ট্রেলিয়া চাইবে লিড আরও বাড়িয়ে প্রোটিয়াদের সামনে এক অতিক্রমণযোগ্য লক্ষ্য দাঁড় করাতে। আর দক্ষিণ আফ্রিকা চাইবে দ্রুত শেষ করে চতুর্থ ইনিংসে নিজেদের ভাগ্য গড়তে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল ক্রমেই হয়ে উঠছে ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য এক উত্তেজনাপূর্ণ থ্রিলার। অপেক্ষায় থাকুন—আগামী দিন কী মোড় নেয়, সেটা বলবে সময়ই!