ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের জেরে আইপিএল অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত, বাতিল শুক্রবারের ম্যাচ
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনার জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়ে গেল ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (IPL)। শুক্রবারের গভর্নিং কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকে এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ধর্মশালায় পাঞ্জাব কিংস বনাম দিল্লি ক্যাপিটালস ম্যাচ চলাকালীন জম্মুতে শুরু হয় পাক সেনার হামলা, যার পরেই পরিস্থিতির গুরুত্ব উপলব্ধি করে ম্যাচ বাতিল করা হয় এবং দর্শকদের দ্রুত মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। মাঠে উপস্থিত ছিলেন আইপিএল চেয়ারম্যান অরুণ ধুমল নিজে।
অতীতেও চ্যালেঞ্জ এসেছে, কিন্তু খেলা থামেনি
এর আগে আইপিএল থেমেছিল না, এমনকি কোভিড মহামারি বা সাধারণ নির্বাচনের সময়েও। ২০০৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রতিযোগিতা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়। ২০২০ ও ২০২১ সালে কোভিড পরিস্থিতির কারণে আইপিএল হয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। তবে এবার ভারত-পাকিস্তান সামরিক উত্তেজনার আবহে প্রতিযোগিতা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত।
নিরাপত্তা ও মানবিক দিক বিবেচনায় স্থগিত আইপিএল
সূত্রের খবর, শুক্রবারের গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকে শুধুমাত্র নিরাপত্তাজনিত কারণেই নয়, মানবিক বিবেচনাও ছিল সিদ্ধান্তের মূল কারণ। একদিকে যখন দেশের সেনারা সীমান্তে প্রাণপণে লড়ছে, তখন আইপিএলের স্টেডিয়ামে ডিজে বাজানো, চিয়ারলিডারদের নাচ—সবটাই দৃষ্টিকটু মনে হয়েছে বোর্ড কর্তাদের কাছে। তাই ম্যাচ বন্ধের বিষয়ে দ্বিতীয়বার ভাবতে হয়নি।
লিগ পর্বে বাকি ১২টি ম্যাচ, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ
আইপিএলের চলতি মৌসুমে এখনও লিগ পর্বে ১২টি ম্যাচ বাকি রয়েছে, সঙ্গে রয়েছে চারটি প্লে-অফের ম্যাচ। বৃহস্পতিবারের বাতিল হওয়া পাঞ্জাব-দিল্লি ম্যাচটির পয়েন্ট ভাগ করা হয়নি, ভবিষ্যতে যদি টুর্নামেন্ট আবার শুরু হয়, সেই ম্যাচটি পুনরায় আয়োজন করা হতে পারে।
সেপ্টেম্বরে পুনরায় আয়োজনের সম্ভাবনা?
একেবারে প্রাথমিক স্তরের আলোচনা অনুযায়ী, যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, তবে সেপ্টেম্বরে আইপিএলের বাকি অংশ আয়োজন করার চেষ্টা করা হতে পারে। যদিও একই সময়ে রয়েছে এশিয়া কাপ এবং আগস্টের শেষে ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ। সেই কারণে নির্দিষ্ট কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। অন্য দেশের ক্রিকেটারদের পাওয়া নিয়েও বিভিন্ন বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে বোর্ড।
জম্মু ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিস্ফোরণ, নিরাপত্তা সতর্কতা জারি
পাকিস্তানের দিক থেকে একাধিক রকেট আছড়ে পড়েছে জম্মু সীমান্তে। আখনুর, সাম্বা, রাজস্থানের কিছু অংশ এবং পাঞ্জাবেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। বেশ কয়েকটি এলাকায় ‘ব্ল্যাকআউট’ করে দেওয়া হয়েছে, বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি সক্রিয় করা হয়েছে হামলা প্রতিহত করার জন্য।
দেশ যখন সীমান্তে এক গভীর সংকটে আছে, তখন খেলার মঞ্চে উল্লাসের সময় নয়—এই বার্তাই দিতে চেয়েছে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। এখন সকলেরই নজর দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকে এবং প্রতীক্ষা—কবে আবার শান্ত পরিবেশে ফিরবে জনপ্রিয় এই ক্রিকেট প্রতিযোগিতা।