এজবাস্টন টেস্টে যত রেকর্ড
অধিনায়কত্ব চাপ নয়, বরং শক্তি—এ কথা যেন আবারও প্রমাণ করলেন শুবমান গিল। হেডিংলিতে টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে অভিষেকেই সেঞ্চুরি, এরপর এজবাস্টনে দ্বিতীয় টেস্টে খেললেন ডাবল সেঞ্চুরি (২৬৯) এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ঝড়ো সেঞ্চুরি (১৬১)।
দুই ইনিংস মিলিয়ে ৪৩০ রান করে গিল ভেঙে দিয়েছেন একের পর এক রেকর্ড। টেস্ট ইতিহাসে এক ম্যাচে ব্যাটসম্যান হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের মালিক এখন তিনি। তাঁর চেয়ে বেশি রান করেছেন শুধু ইংল্যান্ডের গ্রাহাম গুচ—১৯৯০ সালে লর্ডসে ভারতের বিপক্ষে ৪৫৬ রান (৩৩৩ ও ১২৩)।
সেঞ্চুরির পর গিল মারেন ৫টি ছক্কা। এরপর আরও একটি ছক্কার চেষ্টায় শোয়েব বশিরের বলে টাইমিং মিস করে ক্যাচ দেন। তাঁর ১৬১ রানের ইনিংসে ছিল ৮টি ছক্কা—যা টেস্টে কোনো ভারতীয় ব্যাটারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সবচেয়ে বেশি ১২টি ছক্কা মেরেছিলেন যশস্বী জয়সোয়াল, ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই, রাজকোটে।
ভারতের দ্বিতীয় ইনিংস থামে ৪২৭/৬ স্কোরে। ইনিংস ঘোষণা করে ইংল্যান্ডকে দেয় ৬০৮ রানের বিশাল লক্ষ্য। উল্লেখযোগ্যভাবে, চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড মাত্র ৪১৮ রান, ২০০৩ সালে অ্যান্টিগায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ইংল্যান্ডের নিজের সর্বোচ্চ তাড়া করে জয় ৩৭৮, সেটিও এই এজবাস্টনে, ভারতের বিপক্ষেই—তিন বছর আগে।
এই টেস্টে ভারত দুই ইনিংসে মোট রান করেছে ১০১৪, যা তাদের টেস্ট ইতিহাসে প্রথমবার এক ম্যাচে ১০০০ রান পার।
গিলের রেকর্ডগুলোর সংক্ষিপ্ত তালিকা:
▪️ ৪৩০ রান:
এক টেস্টে কোনো ব্যাটসম্যানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান।
▪️ দেশের বাইরে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ রান:
গিলের ৪৩০ রান, আগের রেকর্ড ছিল মার্ক টেলরের (৪২৬, পেশোয়ার, ১৯৯৮)।
▪️ দুই ইনিংসেই ১৫০+ রান:
মাত্র দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে দুই ইনিংসেই ১৫০ ছাড়ালেন। প্রথমজন অ্যালান বোর্ডার (১৯৮০, লাহোর)।
▪️ সেঞ্চুরি + ডাবল সেঞ্চুরি:
নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে এক টেস্টে সেঞ্চুরি ও ডাবল সেঞ্চুরি।
▪️ এক ইনিংসে ৮টি ছক্কা:
ভারতীয়দের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
ভারতের দলগত রেকর্ড:
▪️ মোট ১০১৪ রান:
প্রথমবার টেস্ট ইতিহাসে এক ম্যাচে ১০০০ রান পার করল ভারত। আগের রেকর্ড ছিল ৯১৬ রান (২০০৪, সিডনি)।
▪️ সব দলের মধ্যে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ রানের তালিকা:
১. ইংল্যান্ড – ১১২১ রান (১৯৩০, কিংস্টন)
২. ভারত – ১০১৪ রান (২০২৫, এজবাস্টন)
ম্যাচ সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ৫৮৭ ও ৪২৭/৬ ডি. (গিল ১৬১, জাদেজা ৬৯*, পন্ত ৬৫, রাহুল ৫৫)
ইংল্যান্ড: ৪০৭ ও ৭২/৩ (ডাকেট ২৫; দীপ ২/৩৬)
এজবাস্টন টেস্ট যে শুধু একটি ম্যাচ নয়, বরং পরিণত হয়েছে ইতিহাস রচনার মঞ্চে—তা প্রমাণ করলেন শুবমান গিল এবং তাঁর ভারতীয় দল।