অবশেষে বিরাট কোহলির আইপিএল স্বপ্নপূরণ, প্রীতির পাঞ্জাবকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বেঙ্গালুরু
১৮ বছরের অপেক্ষার অবসান। অবশেষে স্বপ্নপূরণ হলো বিরাট কোহলির। আইপিএলের ইতিহাসে বারবার চেষ্টা করেও যা হয়নি, সেটাই করে দেখালেন তিনি—বেঙ্গালুরুকে এনে দিলেন প্রথম আইপিএল ট্রফি। শেষ বলটিতে যখন জশ হ্যাজলউড ডেলিভারি ছুঁড়লেন, কোহলির চোখে তখন আনন্দাশ্রু। এই এক মুহূর্তেই বুঝিয়ে দিল, এই জয়ের পেছনে কতটা যন্ত্রণা, অপেক্ষা আর প্রতিজ্ঞা লুকিয়ে ছিল।
চতুর্থ ফাইনালে এসে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হলো কোহলির দল। বেঙ্গালুরু আগে ব্যাট করে ৯ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৯০ রান, যা এই ফাইনালের জন্য যথেষ্ট প্রমাণিত হয়। জবাবে প্রীতি জিনতার পাঞ্জাব কিংস থেমে যায় ১৮৪ রানে, হেরে যায় ৬ রানে।
এটা ঠিক যে, ১৯০ রান এই আইপিএলের প্রেক্ষাপটে বিশাল কোনো স্কোর নয়। আহমেদাবাদের মতো ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে এটি ছিল এবারের সর্বনিম্ন প্রথম ইনিংসের সংগ্রহ। তবে চাপের ম্যাচে স্পিনার ক্রুনাল পান্ডিয়ার নিখুঁত বোলিং (৪-০-১৭-২) আর পাঞ্জাব ব্যাটারদের জড়তা বড় পার্থক্য গড়ে দেয়।
প্রভসিমরান সিং, প্রিয়াংশ আর্য, নেহাল ওয়াধেরা—তিনজনই শুরুটা ভালো করলেও ইনিংস গুছিয়ে নিতে পারেননি। প্রিয়াংশ করেন ১৯ বলে ২৪, প্রভসিমরান ২২ বলে ২৬। কিন্তু সবচেয়ে হতাশাজনক ব্যাটিং করেন নেহাল ওয়াধেরা। ১৮ বলে মাত্র ১৫ রান করে দলের গতি পুরো থামিয়ে দেন তিনি।
অন্যদিকে একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন জশ ইংলিস। ২৩ বলে ৩৯ রান করে যখন আউট হন, তখন পাঞ্জাবের দরকার ছিল ৪৭ বলে ৯৩ রান। কিন্তু হ্যাজলউড আর ভুবনেশ্বর কুমারের মতো বোলারদের সামনে সেটা আর সম্ভব হয়নি।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে বেঙ্গালুরুও উড়ন্ত শুরু করতে পারেনি। কোহলির ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৪৩ রান, তবে তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল মাত্র ১২৩। পাঞ্জাবের বোলাররা তাঁকে একের পর এক বাউন্সার আর স্লোয়ারে চাপে ফেলেছিলেন।
তবু বেঙ্গালুরুর ইনিংস দাঁড়িয়ে যায় দলীয় প্রচেষ্টায়। রজত পতিদার, লিয়াম লিভিংস্টোন, মায়াঙ্ক আগারওয়াল, জিতেশ শর্মা—সবাই ২০’র বেশি রান করেন। বিশেষ করে জিতেশের ১০ বলে ২৪ রানের ঝড়ো ইনিংসটা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। যদিও শেষ ওভারে বাঁহাতি পেসার অর্শদীপ সিং মাত্র ৩ রান দিয়ে বেঙ্গালুরুকে ২০০’র নিচেই আটকে দেন।
পাঞ্জাবের হয়ে অর্শদীপ ও কাইল জেমিসন নেন তিনটি করে উইকেট। তবে দুজনই ছিলেন খরচাল—অর্শদীপ ৪০ রান, জেমিসন ৪৮ রান খরচ করেন।
সবশেষে যা বলার, সেটি হলো—এই ম্যাচটা একরকম কোহলির নিয়তিই লিখে রেখেছিল। ১৮ বছরের অধ্যবসায়ের পর অবশেষে কোহলির হাতে উঠল আইপিএলের শিরোপা। মাঠজুড়ে শুধু তাঁরই জয়োল্লাস। আর ক্রিকেটবিশ্ব জেনে গেল, স্বপ্ন যদি সত্যিই বড় হয়, তবে সে স্বপ্ন একদিন পূরণ হবেই!