আর্জেন্টিনা ৩-০ ভেনেজুয়েলা
বুয়েনস আয়ার্সের এস্তাদিও মনুমেন্তাল যেন আবেগের সাগরে ডুবে গেল। জাতীয় দলের কালো জ্যাকেট পরে যখন স্ট্রেচিং করছিলেন লিওনেল মেসি, তখনই চোখে ধরা পড়ল ভেতরের তোলপাড়। চোখে জল, মুখে আভাস—দেশের মাটিতে জাতীয় দলের জার্সিতে এটাই তাঁর শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ।
২০০৫ সালের ৯ অক্টোবর, এই একই মাঠে শুরু হয়েছিল মেসির জাতীয় দলের যাত্রা। ২০ বছর পর একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে সেটাই হয়ে উঠল বিদায়ের দৃশ্য। জাতীয় সংগীতের সময় সন্তানদের নিয়ে সতীর্থদের পাশে দাঁড়ালেন মেসি। গ্যালারিতে পরিবার, স্ত্রী আন্তোনেলা রোকুজ্জোর মুখেও ফুটে উঠেছিল আবেগ।
মাঠে মেসির জাদু
ম্যাচের ৩৯ মিনিটে লিয়ান্দ্রো পারেদেসের পাস থেকে হুলিয়ান আলভারেজ বল পৌঁছে দেন মেসির কাছে। সামনে গোলকিপার আর দুই ডিফেন্ডার, কিন্তু মেসি বললেন, শট নয়—চিপ! বাতাসে ভেসে জালে জড়ানো সেই বল যেন ফুটবলকে রূপ দিল এক শিল্পকর্মে।
৮০ মিনিটে থিয়াগো আলমাদার ক্রস থেকে বাঁ পায়ের ছোঁয়ায় মেসির দ্বিতীয় গোল। সহজ, কিন্তু প্রতীকী—নতুন প্রজন্মের তরফ থেকে বিদায়ী নায়ককে উপহার যেন।
৭৪ মিনিটে নিকো পাজের ক্রস থেকে হেডে গোল করেন লাওতারো মার্তিনেজ। তবে ম্যাচ শেষে সেই গোলও ম্লান হয়ে যায় মেসির আলোয়। ৮৯ মিনিটে হ্যাটট্রিকের সুযোগ এলেও ভিএআরের কারণে অফসাইড ধরা পড়ে।
আবেগঘন বিদায়
ভেনেজুয়েলা পুরো ম্যাচে একটি শটও নিতে পারেনি। আর্জেন্টিনা কাগজে-কলমে ম্যাচ জিতলেও আসল জয় ছিল আবেগের। মেসির প্রতিটি ছোঁয়া, প্রতিটি মুহূর্তে গ্যালারি গলা ফাটিয়ে গেয়েছে, “ওলে, ওলে, ওলে… মেসি, মেসি, মেসি!”
স্কোরশিট বলবে ৩-০, কিন্তু বাস্তব বলবে—এটা ছিল এক যুগের বিদায় অনুষ্ঠান। হয়তো এএফএ প্রীতি ম্যাচ আয়োজন করবে, কিন্তু যদি না হয়, তাহলে এটাই থেকে যাবে দেশের মাটিতে জাতীয় দলের হয়ে মেসির শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ। ৩৮ বছর বয়সেও মেসি দেখিয়ে দিলেন, সময় হয়তো বদলায়, কিন্তু তিনি বদলান না।