গত আইপিএলে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার। গড় ৫০.৩৩, মোট রান ৬০৪ আর স্ট্রাইক রেট ১৭৫—এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে তাঁর ফর্ম কেমন ছিল। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে পাঞ্জাব কিংসকে তুলেছিলেন ফাইনালে। তবুও এশিয়া কাপের দলে ঠাঁই হয়নি তাঁর।
শুধু আইয়ার নন, শীর্ষ রান সংগ্রাহক সাই সুদর্শন (৭৫৯ রান), সেরা বোলার প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা (২৫ উইকেট) কিংবা যশস্বী জয়সোয়াল (৫৫৯ রান)—কেউই জায়গা পাননি। বলা যায়, গৌতম গম্ভীর নেতৃত্বাধীন নির্বাচক প্যানেল এবার আইপিএলের চেয়ে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা ও স্থিতিশীলতাকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
ভাগ্যবান শুবমান গিল
সাই বা জয়সোয়ালের মতোই ধারাবাহিক গিল। তবে নেতৃত্বগুণ ও টেকনিক্যাল পরিপক্বতার জন্যই তিনি সুযোগ পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, সহ-অধিনায়ক হিসেবেও রাখা হয়েছে তাঁকে। সূর্যকুমার যাদবের পরে নেতৃত্বে বিকল্প হিসেবে তাকেই দেখা হচ্ছে।
এ সিদ্ধান্তে চাপ বেড়েছে সঞ্জু স্যামসনের ওপর। কারণ গিল দলে ফিরলে তাঁর জায়গা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। অথচ বিশ্বকাপ-পরবর্তী সময়ে সর্বাধিক তিনটি টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি এসেছে স্যামসনের ব্যাট থেকে। ফলে উইকেটকিপারের জায়গায় তাঁকে নাকি জিতেশ শর্মাকে খেলানো হবে, তা নিয়ে দ্বিধা থেকেই যাচ্ছে।
মিডল অর্ডারে সূর্যের উপর আস্থা
ভারতের ব্যাটিং অর্ডারে চার নম্বর স্থানে থাকবেন অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বিশ্বের সেরা ফিনিশারদের একজন তিনি। তাই তাঁকে সরানো বা নাম্বার পাল্টানোর কোনো সম্ভাবনাই নেই।
স্যামসন বা জিতেশ—যেই খেলুন, উইকেটকিপিংয়ের দায়িত্ব তাঁকেই নিতে হবে। ব্যাটিং ধস সামাল দিতে সব সময়ই ভরসা থাকবেন অক্ষর প্যাটেল। তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৩০-এর ওপরে রাখার ক্ষমতা ভারতের জন্য বাড়তি প্রাপ্তি।
অলরাউন্ডারদের ভূমিকা
হার্দিক পান্ডিয়া ফিট থাকলে ভারতের ব্যালান্স নিখুঁত হয়। চার ওভার বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাট হাতে ভয়ঙ্কর ফিনিশার হিসেবেও তিনি অন্যতম ভরসা। বিকল্প হিসেবে দলে আছেন শিবম দুবে, তবে তাঁর ফিটনেস প্রশ্নবিদ্ধ।
অক্ষর প্যাটেলও ব্যাট-বল দুই দিকেই কার্যকর। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তাঁকে ‘সিচুয়েশন সামলানো’ খেলোয়াড় হিসেবে দেখছেন গম্ভীর।
লোয়ার অর্ডার ও বোলিং
ভারতের মূল বোলিং শক্তি বুমরা, বরুণ চক্রবর্তী ও কুলদীপ যাদব। উইকেট ও প্রতিপক্ষ দেখে মাঝে মধ্যে রোটেশন হতে পারে। চোটপ্রবণ বুমরা ও বরুণকে সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে।
অতিরিক্ত পেসারের জায়গায় লড়াই হর্ষিত রানা ও অর্শদীপ সিংয়ের মধ্যে। ব্যাট হাতে বড় ছক্কা মারার ক্ষমতার কারণে এগিয়ে আছেন হর্ষিত।
ভারতের সম্ভাব্য একাদশ (এশিয়া কাপ ২০২৫)
অভিষেক শর্মা, শুবমান গিল (সহ-অধিনায়ক), তিলক বর্মা, সূর্যকুমার যাদব (অধিনায়ক), সঞ্জু স্যামসন/জিতেশ শর্মা, হার্দিক পান্ডিয়া, অক্ষর প্যাটেল, হর্ষিত রানা/অর্শদীপ সিং, যশপ্রীত বুমরা, কুলদীপ যাদব, বরুণ চক্রবর্তী।
শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, দুর্দান্ত আইপিএল করেও সবাই জাতীয় দলে সুযোগ পাচ্ছেন না। তবে ভারতের এই স্কোয়াডে অভিজ্ঞতা, নেতৃত্ব আর ধারাবাহিকতাকেই বড় করে দেখা হয়েছে।