দ্বিতীয় দিনে হতাশার ছাপ, বুমরাহ ছাড়া নিষ্প্রভ বোলিং, পোপের শতরানে এগোল ইংল্যান্ড
হেডিংলেতে প্রথম দিনের দাপটের পর দ্বিতীয় দিন ভারতীয় দল যেন সম্পূর্ণ বদলে গেল। ইংল্যান্ড দাপট দেখাল, আর ভারতের ভুলের মাশুলও দিল শুভমন গিলের দল। লোয়ার অর্ডারের ব্যর্থতা, জসপ্রীত বুমরাহ ছাড়া বোলারদের নিষ্প্রভ পারফরম্যান্স ও একের পর এক ক্যাচ ফস্কানোর খেসারত দিতে হল টেস্টের দ্বিতীয় দিনেই।
দিন শেষে ইংল্যান্ডের স্কোর ৩ উইকেটে ২০৯। ভারত থেকে মাত্র ২৬২ রানে পিছিয়ে। ইংল্যান্ডের ইনিংসের মূল ভরসা হয়ে উঠেছেন ওলি পোপ, যিনি ১০০ রানে অপরাজিত।
ভারতের পতনের তিনটি বড় কারণ—
১. লোয়ার অর্ডারের ব্যর্থতা
২. বুমরাহ ছাড়া বোলিং আক্রমণের ব্যর্থতা
৩. একাধিক ক্যাচ ফস্কানো
প্রথম ইনিংসে শুভমন, যশস্বী এবং পন্থের শতরান ভারতকে বড় রানের দিকে এগিয়ে দিয়েছিল। ৩ উইকেটে ৪৩০ রান থেকে হঠাৎই ৪৭১ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত। শেষ ৪১ রানে পড়ে যায় ৭ উইকেট। পন্থের ছন্দ হারানো, জাডেজা-শার্দূলদের ব্যর্থতা ও বাকি ব্যাটারদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ভারতের স্কোর আটকে দেয়।
টেস্ট ইতিহাসে তিন শতরানের পর এত কম রান ভারত আর কখনও করেনি। বিদেশের মাটিতে এখনও ভারতের লোয়ার অর্ডার ভরসা দিতে পারছে না।
ইংল্যান্ড ইনিংস শুরু করার সময় বৃষ্টি ও মেঘলা আবহাওয়ার মধ্যে বল হাতে তুলে নেন বুমরাহ। প্রথম স্পেলেই উইকেট তুলে নেন জ্যাক ক্রলির। দুর্দান্ত সুইং ও গতি মিশিয়ে ইংল্যান্ডকে চাপে রাখেন তিনি। তবে অন্যদিকে সিরাজ ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ ছিলেন খুবই ব্যর্থ। সিরাজ তিন ওভারে ২৪ ও প্রসিদ্ধ চার ওভারে দেন ২৮ রান।
জাডেজাও বিশেষ স্পিন বের করতে পারেননি, সহজেই রান তুলেছেন ইংরেজ ব্যাটাররা। দিন শেষে বুমরাহ নেন তিনটি উইকেট। হ্যারি ব্রুককেও আউট করেছিলেন তিনি, কিন্তু নো বল হওয়ায় সেই সুযোগ হাতছাড়া হয়।
বুমরাহের দুর্দান্ত বোলিংয়ের পরও ভারতের ফিল্ডিং বড় হতাশার। তিনটি ক্যাচ পড়ে যায়, যার মধ্যে ডাকেটের দুটি। একটি কঠিন ক্যাচ মিস করেন যশস্বী স্লিপে, অন্যটি জাডেজার হাত ফস্কায় পয়েন্টে— যা তিনি সাধারণত ধরেনই।
পরে ওলি পোপের ক্যাচও মিস করেন যশস্বী। এর ফলস্বরূপ, জীবনদানে ভর করে শতরান করেন পোপ। আগেও ভারতে শতরান করা এই ব্যাটার আবারও প্রথম টেস্টেই প্রমাণ করলেন নিজের গুরুত্ব।
শার্দূল ঠাকুরকে ৪০তম ওভারে বল হাতে দেখা যায়। যদিও তাঁর বল নতুন অবস্থায় কার্যকরী, তবুও শুভমন তাঁকে দেরিতে আক্রমণে আনেন। বোলিং সিদ্ধান্তে অধিনায়কের অনভিজ্ঞতা স্পষ্ট। সুনীল গাভাসকর ধারাভাষ্যে বলেন, “শুধু বুমরাহর উপর নির্ভর করলে চলবে না, বাকিদেরও সাহায্য করতে হবে।”
এই পরিস্থিতিতে ভারতের টিম ম্যানেজমেন্টের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ। তৃতীয় দিন ইংল্যান্ডের ইনিংস দ্রুত গুটিয়ে দিতে না পারলে বড় সমস্যায় পড়বে ভারত। দ্বিতীয় দিনের পারফরম্যান্সে মুখের হাসি উধাও শুভমন গিলের। শুরুতেই টেস্ট অধিনায়কত্বের কঠিন বাস্তবটা টের পেলেন তিনি।