সত্য বলুন, গুজব নয়: আইপিএল স্থগিতের পেছনে বাস্তব কারণ বুঝুন
সম্প্রতি “প্রথম আলো”-তে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের আইপিএল আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে কারণ আমিরাত ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) প্রতিশ্রুতির কারণে ভারতের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে। এই খবরের উৎস? পাকিস্তানের টিভি চ্যানেল জিও সুপার!
একটি জাতীয় গণমাধ্যম হিসেবে প্রথম আলোর উচিত সত্য যাচাই করা, পক্ষপাতদুষ্ট বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উৎসের বরাতে সরাসরি প্রতিবেদন না লেখা। পাকিস্তানি চ্যানেল যা বলল, তাই তুলে ধরা কোনোভাবেই পেশাদার সাংবাদিকতার উদাহরণ হতে পারে না।
ভারতের সক্ষমতা কি জিও সুপারের মুখাপেক্ষী?
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, এমনকি আইপিএলের পূর্ণ মৌসুম একাধিকবার বিদেশে আয়োজনের ইতিহাস বিসিসিআইয়ের আছে। ভারত চাইলে এখনো একসঙ্গে ৪টি আইপিএল চালাতে সক্ষম—সেটা আর্থিক, সাংগঠনিক এবং প্রযুক্তিগত সবদিক থেকেই সম্ভব। তাহলে প্রশ্ন ওঠে—কেন আইপিএল স্থগিত করা হলো?
মানবিকতা ও সংবেদনশীলতা থেকেই এই সিদ্ধান্ত
বর্তমানে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। ধর্মশালার ম্যাচের সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে স্টেডিয়ামে, আলো নিভে যায়, নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ম্যাচ বন্ধ হয়। এই প্রেক্ষাপটে বিসিসিআই যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা একান্তই মানবিক ও সংবেদনশীল— উৎসব নয়, আগে জীবন ও নিরাপত্তা।
যখন দেশ এক সংকটময় মুহূর্তে আছে, তখন “ডিজে বাজানো” কিংবা "নাচ-গান" দিয়ে উৎসবমুখর ক্রিকেট আয়োজন সাধারণ মানুষের অনুভূতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে। এটাই ছিল আসল কারণ আইপিএল আপাতত স্থগিত রাখার।
প্রতিবেদন লেখার আগে তথ্য যাচাই জরুরি
বাংলাদেশের প্রথম সারির দৈনিক হিসেবে প্রথম আলোর দায়িত্ব আরও বেশি। শুধুমাত্র 'সেনসেশন' তৈরির জন্য পাকিস্তানের একতরফা প্রতিবেদনের বরাতে ভারতের মতো পরাক্রমশালী ক্রিকেট জাতির সিদ্ধান্তকে হাস্যকরভাবে ব্যাখ্যা করা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।
সত্য বলুন, গুজব নয়
ভারতীয় ক্রিকেট ক্ষমতার পরিচয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, বিশ্বকাপ ও আইপিএলের মাধ্যমে বহুবার রেখেছে। কারো মুখাপেক্ষী হয়ে নয়, বরং মানবিক বিবেচনায় তারা যুদ্ধের সময় ক্রিকেট উৎসব থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে—এটাই সত্য। এ ধরনের সংবাদ পরিবেশনের সময় সংবেদনশীলতা ও দায়িত্ববোধ থাকা উচিত।