টেনিস তারকা মেয়েকে গুলি করে হত্যা করলেন বাবা — হরিয়ানায় হৃদয়বিদারক ঘটনা

 

RADHIKA

ভারতের হরিয়ানার গুরগাঁওয়ে এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হলো সুশান্ত লোক-টু এলাকাটেনিস তারকা রাধিকা যাদবকে গুলি করে হত্যা করেছেন তাঁরই বাবা, দীপক যাদবকারণপ্রতিবেশীদের কটূক্তিতাদের দাবি ছিল, রাধিকার উপার্জনেই সংসার চলেএই অপমান সহ্য করতে না পেরে নিজের মেয়েকেই শেষ করে দিলেন দীপক 

২৫ বছর বয়সী রাধিকা যাদব রাজ্য পর্যায়ের একজন স্বীকৃত টেনিস খেলোয়াড় ছিলেনডাবলসে আন্তর্জাতিক র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতির পথে ছিলেন তিনিনিজেই একটি টেনিস একাডেমি পরিচালনা করতেন এবং সমাজের উচ্চপর্যায়ের মানুষদেরও কোচিং দিতেনতাঁর কোচিংয়ে অনেক উঠতি খেলোয়াড় নিয়মিত অংশ নিত 

তবে দীপক যাদব, বয়স ৫৪, প্রতিবেশীদের কটূক্তি নিয়ে চরম মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলেনতাঁকে প্রায়ই শুনতে হতো, “মেয়ের আয়ে চলে সংসার।” এমন পরিস্থিতিতে দীপক তাঁর মেয়েকে একাধিকবার একাডেমি বন্ধ করার অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু রাধিকা তাতে রাজি হননি 

১১ জুলাই সকালে ঘটনার সময় রাধিকাকে লক্ষ্য করে পাঁচটি গুলি ছোড়েন দীপক, যার তিনটি গুলি তাঁর শরীরে বিদ্ধ হয়ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। এ সময় রাধিকার মা অন্য ঘরে অসুস্থ অবস্থায় ছিলেন 
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে পুলিশের কাছে খবর আসেপুলিশ দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছায় এবং নিহতের চাচা কুলদীপ যাদবকে পায়পরে পুলিশ দীপক যাদবকে বাড়ি থেকেই আটক করেতাঁর লাইসেন্স করা .32 বোরের রিভলবারও জব্দ করা হয়সন্ধ্যায় তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখানো হয় 
ঘটনার তদন্ত করছে গুরগাঁওয়ের সেক্টর ৫৬-এর পুলিশ স্টেশনময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এখনও পাওয়া যায়নি 

মনোবিদদের মতে, দীপক দীর্ঘদিন ধরে মানসিক চাপে ছিলেনসামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মেয়ের রিল বানানোউপস্থিতি তাঁকে বিব্রত করতগ্রামের লোকেরা এসব নিয়েও কটূক্তি করত, যা তাঁর রক্ষণশীল মনোভাবকে আঘাত করেছিল 

রাধিকার জন্ম ২৩ মার্চ 2000। তিনি ইন্ডিয় টেনি অ্যাসোসিয়েশনে র‍্যাঙ্কিংয় মেয়েদে অনূর্ধ্ব-১৮ বিভাগ সর্বোচ্ ৭৫ নম্বর উঠেছিলে ডাবলস ৫৩ এব সিঙ্গলস ৩৫ নম্বর ছিলে আন্তর্জাতি টেনি ফেডারেশনে (আইটিএ) পর্যায়ে তাঁ র‌্যাঙ্কি ছি ১১৩। তব দু বছ আগ চো পাওয়া তিনি প্রতিযোগিতামূল টেনি থেক বির এব ইনস্টাগ্রাম ইনফ্লুয়েন্সা হিসেব নিজেক প্রতিষ্ঠি করা চেষ্ট করছিলে 

রাধিকার কোচিংয়ে অংশ নেওয়া ছাত্রছাত্রীরা তাঁর মৃত্যুতে শোকাহতএক বাসিন্দা বলেন, “রাধিকা বলত তাঁর বাবা-মা রক্ষণশীল, কিন্তু সে ছিল প্রাণবন্ত এবং অসাধারণ খেলোয়াড়।” 

স্থানীয় ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পবন যাদব বলেন, “কিছু প্রতিবেশী রাধিকার সাফল্য মেনে নিতে পারেনিতাঁর রিল নিয়ে অশালীন মন্তব্য করতশেষমেশ এসব সহ্য করতে না পেরে দীপক এই ভয়াবহ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” 

এই ঘটনা যেন আমাদের সমাজে মেয়েদের সাফল্যকে কীভাবে এখনো বাঁকা চোখে দেখা হয়, তারই এক নির্মম উদাহরণ 

*

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post