TODAY'S TOP 10 NEWS 21.03.2025


1.ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা নিয়ে ইউরোপে বিভাজন

ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কাউন্সিলের শীর্ষ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (EU) সমর্থনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তবে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা কৌশল নিয়ে ইইউ দেশগুলোর মধ্যে গভীর মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। ইউরোপের শক্তিধর দেশগুলো, বিশেষ করে ফ্রান্স ও জার্মানি, ইউক্রেনকে আরও সামরিক সহায়তা দেওয়ার পক্ষে থাকলেও, কিছু দেশ কূটনৈতিক সমাধান খোঁজার পক্ষে মত দিয়েছে। অন্যদিকে, পোল্যান্ড ও বাল্টিক দেশগুলো ইউক্রেনকে আরও শক্তিশালী অস্ত্র সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছে, যাতে তারা রাশিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করতে পারে
সম্মেলনে ইইউ নেতারা ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা এবং সাহায্যের পরিমাণ নিয়ে বিতর্ক করেছেন। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন বলেছেন, "আমাদের অবশ্যই একসঙ্গে কাজ করতে হবে এবং ইউক্রেনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে হবে, যাতে তারা স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারে।" তবে, কিছু দেশ অর্থনৈতিক চাপ এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমস্যার কারণে ইউক্রেনকে অতিরিক্ত সহায়তা দিতে আগ্রহী নয়। হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার মতো দেশগুলো বলছে, দীর্ঘমেয়াদী সামরিক সহায়তা তাদের অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ ইউরোপের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বড় ধরনের বিভক্তি সৃষ্টি করেছেন্যাটো ও ইইউ-এর ঐক্য রক্ষা করা এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে যখন রাশিয়া নতুন সামরিক অভিযান পরিচালনা করছে






2.হিথ্রো বিমানবন্দর বন্ধ 

লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর একটি বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনে আগুনের কারণে শুক্রবার পুরো দিন বন্ধ থাকবে, যা হাজারো বাড়িতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করেছে। লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, সারা দিন বন্ধ থাকবে। বিমানবন্দরের নিকটবর্তী একটি বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনে আগুন লাগার ফলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই অগ্নিকাণ্ডের কারণে বিমানবন্দরের বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে, যা বিমান চলাচলে গুরুতর প্রভাব ফেলেছে। এই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে হিথ্রো বিমানবন্দরে শতাধিক ফ্লাইট বাতিল বা অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয়েছে, যা যাত্রীদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যাত্রী ও কর্মীদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিমানবন্দরটি শুক্রবার রাত ১১:৫৯ মিনিট পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে।

এছাড়াও, এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে লন্ডনের হাজারো বাড়ি বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনঃস্থাপনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। বিমানবন্দর বন্ধ থাকার কারণে যাত্রীদের বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের তাদের এয়ারলাইনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে সর্বশেষ তথ্য জানার আহ্বান জানিয়েছে।



3.ট্রাম্পের শিক্ষা বিভাগ বিলুপ্তির আদেশ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা বিভাগ (ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এডুকেশন) বিলুপ্তির প্রক্রিয়া শুরু করবে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে শিক্ষা সংক্রান্ত ক্ষমতা রাজ্য ও স্থানীয় সরকারের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।​ ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের পেছনে যুক্তি হলো, ফেডারেল সরকারের নিয়ন্ত্রণ শিক্ষার্থীদের সাফল্যের উন্নতি করতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষা বিভাগটি ৩ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি ব্যয় করেছে, যা শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়নে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেনি। তবে, এই পদক্ষেপ কার্যকর করতে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন, যেখানে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও, শিক্ষা বিভাগ বিলুপ্তির মতো বড় আইন পাসের জন্য ৬০টি ভোটের প্রয়োজন হবে। সিনেট ডেমোক্র্যাটরা এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন এবং শিক্ষা বিভাগের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।

এই সিদ্ধান্তের ফলে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী এবং শিক্ষা কর্মী প্রভাবিত হতে পারেন। বিরোধীরা বলছেন, শিক্ষা বিভাগের মাধ্যমে পরিচালিত ফেডারেল কর্মসূচিগুলো বন্ধ হলে শিক্ষার্থীদের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, শিক্ষা ব্যবস্থার দায়িত্ব অঙ্গরাজ্য ও স্থানীয় সরকারকে ফিরিয়ে দেওয়া হলে তা আরও কার্যকর হবে। এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। বেশ কয়েকটি ডেমোক্র্যাটিক রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতে মামলা দায়ের করেছেন, যারা শিক্ষা বিভাগ বন্ধ করা এবং এ বিভাগের কর্মীদের গণছাঁটাই বন্ধ করতে বাধ্য করতে চান।ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত মার্কিন শিক্ষা ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে, যা ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের উপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে।


4.ইসরায়েলে গণবিক্ষোভ

গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযান বন্ধ এবং সেখানে আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে ইসরায়েলে ব্যাপক গণবিক্ষোভ হয়েছে। বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, রাজধানী জেরুজালেমে পার্লামেন্ট ভবনের কাছে হাজারো মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নেন। বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন এবং গাজায় হামাসের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে জিম্মিদের মুক্তির দাবি জানান। তারা অভিযোগ করেন, নেতানিয়াহু সরকারের নীতির কারণে জিম্মিদের মুক্তি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, গাজায় বিমান হামলা চালায়, যাতে চার শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হন। এই হামলার পর ইসরায়েল স্থল অভিযানও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই হামলায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছেন।বিক্ষোভকারীরা গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করে কূটনৈতিক উপায়ে সমস্যার সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে জিম্মিদের নিরাপদে মুক্ত করা যায় এবং সংঘর্ষের অবসান হয়।


5.কানাডায় নির্বাচন ঘোষণা প্রত্যাশিত

কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী শীঘ্রই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে পারেন। কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি শিগগিরই ফেডারেল নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে পারেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি আগামী রবিবার সংসদ ভেঙে দিয়ে ২৮ এপ্রিল বা ৫ মে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করতে পারেন।মার্ক কার্নি, ব্যাংক অব কানাডা এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সাবেক গভর্নর, সম্প্রতি লিবারেল পার্টির নেতা নির্বাচিত হয়েছেন এবং বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য বিরোধ এবং অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শক্তিশালী ম্যান্ডেট পেতে আগাম নির্বাচনের পরিকল্পনা করছেন।নির্বাচনে কার্নির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েরে পয়লিয়েভ্রে। কার্নির রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কম হলেও, তিনি তার অর্থনৈতিক দক্ষতা ও নেতৃত্বগুণ দিয়ে ভোটারদের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করবেন।আগামী রবিবার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার পর নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হবে, যা কানাডার ভবিষ্যত রাজনৈতিক দিক নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।



6.ভারতে 'হানি ট্র্যাপ' কেলেঙ্কারি: কর্ণাটক বিধানসভায় চাঞ্চল্য

সম্প্রতি কর্ণাটক বিধানসভায় 'হানি ট্র্যাপ' কেলেঙ্কারি নিয়ে তুমুল বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিধায়করা সিডি হাতে নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন, যা রাজ্য রাজনীতিতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই কেলেঙ্কারির সূত্রপাত হয় যখন বিধানসভায় কিছু বিধায়ক দাবি করেন যে, উচ্চপদস্থ রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলার জন্য হানি ট্র্যাপ ব্যবহার করা হয়েছে। তাঁদের মতে, নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিকে আপত্তিকর অবস্থায় ক্যামেরাবন্দি করে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করা হয়েছে। বিধানসভায় প্রকাশ্যে সিডি দেখিয়ে কয়েকজন বিধায়ক দাবি করেছেন যে, তাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। যদিও এসব ভিডিওর সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তবে বিরোধী দল অভিযোগ তুলেছে যে সরকারপক্ষ এটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

এই ঘটনা সামনে আসার পর থেকে রাজ্যের রাজনীতিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। বিরোধী দল সরকারকে আক্রমণ করে বলছে, এই কেলেঙ্কারির যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত এবং দোষীদের শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন। অন্যদিকে, সরকারপক্ষ এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। জনগণের একাংশের দাবি, রাজনৈতিক নেতাদের স্বচ্ছতা বজায় রাখা উচিত এবং এ ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক কাজ বন্ধ করা জরুরি। এই কেলেঙ্কারির সত্যতা যাচাই করতে তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি উঠেছে। সরকার এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেবে, তা দেখার জন্য সবাই অপেক্ষায় রয়েছে। এই ঘটনা কর্ণাটক রাজনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলবে এবং এর ফলাফল কী হতে পারে, তা সময়ই বলে দেবে।








7.ইন্দোনেশিয়ায় তিন ভারতীয়ের মৃত্যুদণ্ড

ইন্দোনেশিয়ায় মাদক পাচারের দায়ে তিন ভারতীয় নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ১০৬ কেজি ক্রিস্টাল মেথামফেটামিন (মেথ) পাচারের অভিযোগে তারা এই কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হয়েছেন। দেশটির কঠোর মাদকবিরোধী আইন অনুযায়ী, বড় পরিমাণ মাদক পাচারের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। এই রায় ইন্দোনেশিয়ার মাদকবিরোধী নীতির কঠোরতারই প্রতিফলন। তদন্ত সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, এই তিন ভারতীয় নাগরিক দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মাদক পাচারের একটি বড় চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ইন্দোনেশিয়ার পুলিশ গোপন সূত্রের মাধ্যমে তাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে জানতে পারে এবং এক বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ১০৬ কেজি ক্রিস্টাল মেথ উদ্ধার করা হয়, যা আন্তর্জাতিক বাজারে কোটি কোটি ডলারের সমমূল্য। ইন্দোনেশিয়া বিশ্বে অন্যতম কঠোর মাদকবিরোধী আইন প্রয়োগকারী দেশগুলোর মধ্যে একটি। দেশটিতে মাদক সংক্রান্ত অপরাধের শাস্তি অত্যন্ত গুরুতর, এবং অনেক ক্ষেত্রেই মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর আগে বিভিন্ন দেশের নাগরিকরাও মাদক পাচারের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হয়েছেন। ভারতীয় দূতাবাস এই তিন ভারতীয় নাগরিকের বিষয়ে ইন্দোনেশিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। ভারত সরকার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং দোষীদের আইনি সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে ইন্দোনেশিয়ার সরকার মাদক সংক্রান্ত অপরাধে কোনো রকম শিথিলতা দেখানোর পক্ষপাতী নয়।

এই রায়ের পর মানবাধিকার সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, মৃত্যুদণ্ড অত্যন্ত কঠোর শাস্তি এবং এটি মানবাধিকারের পরিপন্থী। জাতিসংঘও বিভিন্ন সময়ে ইন্দোনেশিয়াকে মৃত্যুদণ্ড বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে। তবে, দেশটির সরকার এখন পর্যন্ত তাদের কঠোর অবস্থান বজায় রেখেছে। এই ঘটনাটি আন্তর্জাতিক মাদক পাচারের বিরুদ্ধে একটি বড় বার্তা বহন করে। বিশ্বের অনেক দেশ মাদক চোরাচালান বন্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদক পাচারের মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়লে যে ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে, এটি তারই একটি দৃষ্টান্ত। যদিও ভারতের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে, তবে এই মামলার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে ইন্দোনেশিয়ার বিচার ব্যবস্থার ওপর। মাদক পাচারের বিরুদ্ধে লড়াই বিশ্বজুড়েই কঠোর হচ্ছে এবং এই ধরনের কড়া আইনি ব্যবস্থা সেই প্রচেষ্টারই অংশ।



8.দিল্লি হাইকোর্টের বিচারকের বাড়িতে নগদ অর্থ উদ্ধারের ঘটনায় তোলপাড়

দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মার সরকারি বাসভবনে সম্প্রতি আগুন লাগার পর দমকল কর্মীরা একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে আনেন। তারা বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ উদ্ধার করেন, যা এই মুহূর্তে ভারতীয় বিচারব্যবস্থায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাসভবনে অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়ার পর দমকল কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আগুন নেভানোর সময় তারা বাসার ভেতরে লুকিয়ে রাখা বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ খুঁজে পান। এই অর্থের পরিমাণ কত, তা এখনও নিশ্চিত নয়, তবে অনুমান করা হচ্ছে এটি কোটি টাকারও বেশি হতে পারে। 

এই ঘটনার পরপরই সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম বিচারপতি যশবন্ত বর্মাকে এলাহাবাদ হাইকোর্টে বদলি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়নি, তবে এই ধরনের অর্থ উদ্ধারের ঘটনা বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এই বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করার নির্দেশ দিতে পারেন। যদি প্রধান বিচারপতি সন্তোষজনক উত্তর না পান, তবে সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতি এবং হাইকোর্টের দুইজন প্রধান বিচারপতির সমন্বয়ে একটি তদন্ত প্যানেল গঠন করা হতে পারে। এই প্যানেল নির্ধারণ করবে উদ্ধারকৃত অর্থের প্রকৃত উৎস এবং এর সঙ্গে কোনো দুর্নীতির সংশ্লিষ্টতা আছে কি না। 

এই ঘটনা বিচারকদের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা কমাতে পারে। বিচারবিভাগের শীর্ষ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তার বাসভবন থেকে নগদ অর্থ উদ্ধারের ঘটনা বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার প্রশ্ন তুলতে পারে। তাই এই বিষয়ে যথাযথ তদন্ত ও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচারব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অটুট রাখতে হলে, এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দোষী প্রমাণিত হলে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। এখন পুরো ভারত তাকিয়ে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী সিদ্ধান্তের দিকে।


9.মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় গবেষকের নির্বাসন স্থগিত

মার্কিন আদালত সম্প্রতি ভারতীয় গবেষক বাদর খান সুরির নির্বাসন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বাদর খান সুরি জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্টডক্টরাল গবেষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাকে হামাসের সাথে সম্পর্ক থাকার অভিযোগে আটক করা হয়েছিল, তবে আদালতের সাম্প্রতিক রায় তাকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সুরির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে যে তিনি হামাসের সাথে অর্থনৈতিক ও গবেষণাগত সহযোগিতা করেছেন। তবে তার পরিবার ও সমর্থকরা বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তাদের দাবি, তিনি শুধুমাত্র একাডেমিক গবেষণার সাথে যুক্ত ছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। মার্কিন আদালত সুরির নির্বাসন আপাতত স্থগিত করেছে এবং নতুন করে প্রমাণ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের জন্য সময় চেয়েছে। আদালতের এই সিদ্ধান্ত অনেকের মতে যুক্তিসঙ্গত, কারণ প্রমাণের ঘাটতির কারণে সুরির নির্বাসন ন্যায়সঙ্গত হত না।

সুরির আইনজীবীরা আদালতে যুক্তি দেখিয়েছেন যে তাকে অন্যায়ভাবে টার্গেট করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর প্রমাণ নেই। আদালত তাদের যুক্তি আমলে নিয়ে নির্বাসন স্থগিতের রায় দেয়। তবে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। এই রায়ের পর ভারতীয় কূটনৈতিক মহল থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে অনেক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা মনে করছে যে, সন্দেহের ভিত্তিতে কাউকে নির্বাসিত করা উচিত নয় এবং যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। বাদর খান সুরির নির্বাসন স্থগিতের এই সিদ্ধান্ত তার সমর্থকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজয়। তবে, তদন্ত এখনো চলমান এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কী হবে, তা সময়ই বলে দেবে। বিশ্বজুড়ে গবেষকদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, কারণ একাডেমিক স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের প্রশ্ন এখানে গভীরভাবে জড়িত।


10.মাইক্রোসফ্ট ইন্ডিয়া প্রধানের সাক্ষাৎকার: এআই কীভাবে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় বিপ্লব ঘটাচ্ছে

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) বর্তমান প্রযুক্তি জগতে অন্যতম আলোচিত বিষয়। সম্প্রতি, মাইক্রোসফ্ট ইন্ডিয়ার প্রধানের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে কীভাবে এআই শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা খাতে এক নতুন বিপ্লব আনতে সক্ষম হচ্ছে। 

মাইক্রোসফ্ট ইন্ডিয়া প্রধান বলেছেন, "এআই আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনছে। এটি শিক্ষকদের জন্য একটি সহায়ক হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে, যেখানে ব্যক্তিগতকৃত শিক্ষার মাধ্যমে প্রতিটি শিক্ষার্থী তার নিজস্ব গতিতে শিখতে পারছে।" এআই-এর মাধ্যমে প্রতিটি শিক্ষার্থীর দক্ষতা ও দুর্বলতা অনুযায়ী উপকরণ সরবরাহ করা সম্ভব। গ্রামীণ এবং শহুরে শিক্ষার মধ্যে পার্থক্য কমানো সম্ভব হচ্ছে। এআই-চালিত অনুবাদ ও ভয়েস-অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্যবহারের ফলে শিক্ষার্থীরা সহজে শেখার সুযোগ পাচ্ছে। 

এআই স্বাস্থ্যসেবায় একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনছে। মাইক্রোসফ্ট ইন্ডিয়া প্রধান বলেন, "স্বাস্থ্যসেবা এখন শুধুমাত্র চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতার উপর নির্ভরশীল নয়, বরং ডেটা-ড্রিভেন সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে আরও উন্নত হচ্ছে।" এআই-ভিত্তিক অ্যালগরিদম রোগ নির্ণয়ের নির্ভুলতা বাড়াতে সহায়তা করছে। রিমোট চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলেও উন্নত চিকিৎসা প্রদান সম্ভব হচ্ছে। নতুন ওষুধ আবিষ্কারের জন্য এআই-এর ব্যবহার গবেষণার গতি বাড়াচ্ছে। 

মাইক্রোসফ্ট ইন্ডিয়া এআই প্রযুক্তি উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তাদের মূল লক্ষ্য:

  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় আরও উন্নত এআই মডেল তৈরি করা।
  • উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য স্বল্পমূল্যে এআই প্রযুক্তি সরবরাহ করা।
  • ব্যক্তিগত গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তা বজায় রেখে এআই-ভিত্তিক পরিষেবা প্রদান করা।মাইক্রোসফ্ট ইন্ডিয়া প্রধানের মতে, "এআই-এর সঠিক ব্যবহার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। তবে, এটি নিশ্চিত করতে হবে যে প্রযুক্তি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং মানুষের কল্যাণে কাজ করছে।" এআই-এর এই অগ্রযাত্রা ভবিষ্যতে শিক্ষার্থী ও রোগীদের জন্য আরও উন্নত সুযোগ তৈরি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

*

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Sponsord

Sponsord